’অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়হীন কর্মকাণ্ডে জনগণের ন্যুনতম মানবাধিকার বিপন্ন হয়েছে’ বলে গতকাল বৃহস্পতিবার গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ নেতৃত্বাধীন এই কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতির প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করলে আমরা দেখতে পাই, অন্তর্বর্তী সরকার দায়হীনভাবে ঘটনাগুলো ঘটতে দিয়েছে। জনগণের ন্যুনতম মানবাধিকারকে বিপন্নতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ‘অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী ভূমিকা গ্রহণ করছে’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলার অবনতি, শ্রমিক হত্যা, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষরে জবরদস্তি-এ সবকিছু প্রমাণ করে এই অন্তর্বর্তী সরকার জনস্বার্থে কোনো পরিবর্তনে আগ্রহী নয়।’
সরকার জনগণের মতামতকে প্রাধাণ্য না দিয়ে বৈদেশিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও লুটপাটকারী গোষ্ঠীর প্রতি ‘বারবার ভরসা রেখে জনবিরোধিতার প্রমাণ দিচ্ছে’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশব্যাপী ‘মব ভায়োলেন্সে’ অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থন রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন কমিটির সদস্যরা। তারা বলেন,অন্তর্বর্তী সরকারের নির্লিপ্ততায় বা সমর্থনে মবোক্রেসি চলছে দেশে। গত এক বছরে বিভিন্ন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করা যৌথবাহিনী কেন স্থানীয় মব ও হামলা সামলাতে পারছে না তা আমাদের আশ্চর্য করে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নানা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা, বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও সমালোচনা করেন কমিটির সদস্যরা। তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়ায় বৈশ্বিক মানদণ্ড না মেনে পাইকারিভাবে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। তারা ফ্যাসিস্ট পদ্ধতির এতটুকু বদল না করে ফ্যাসিবাদ বিরোধিতার বাগাড়ম্বর করছে। ব্যক্তিগত বিদ্বেষের জের করে লীগ ট্যাগ দিয়ে মামলা করা ও বিচারহীনভাবে জেলে আটকে রাখাকে স্বাভাবিকীকরণ করেছে এখনকার বিচার ব্যবস্থা। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর জামিন অধিকার থাকলেও কারাগারে বন্দি বম জাতিগোষ্ঠীর নাগরিকদের জামিনের অধিকার পাচ্ছেন না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক ও বিচারিক ব্যবস্থার গোষ্ঠীগত স্বার্থরক্ষা ও ফ্যাসিস্ট কাঠামোর বদৌলতে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরের এক বছরে হাসিনার সরকারকে ফিরিয়ে এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক হত্যা, নারী নিপীড়ক, মব ভায়োলেন্সে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্যরা। একইসঙ্গে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, অন্যায় ছাঁটাই প্রত্যাহার এবং নিহত শ্রমিকের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়হীন কর্মকাণ্ডে বিপন্ন মানবাধিকার
- আপলোড সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ১২:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ১২:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ